কিছু না বলা কথা
সন্ধ্যা ৬ টা বেজে ১৪ মিনিট।
২৪এ বৈশাখ, ১৪২৯।
অনেক দিন ধরে মনে কিছু কথা চেপে রেখেছি। বলতে পারছিলাম। আজ তা আর না বলে পারলাম না। এখন আমি এগারো কেলাসে পড়ছি। উচ্চ মাধ্যমিক। ইংরেজিতে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষ। তবে এই দু-বছরের শিক্ষার যাত্রা আর দুবছর নেই। আগামী আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের দিকে হইত হবে আমাদের উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর তারপরই আসল খেলা শুরু। যতই বাস্তবা থেকে দুরে যাওয়ার চেষ্টা করি না কেন, তা ঠিক ভুতের মত পেছন থেকে উঁকি মারবেই আর পারলেই ঘাড় মটকাবে। আমি এখনো ভাবতেই পারছি না আমি হঠাৎ এতো বড় হয়ে গেলাম। যারা মনে করছ যে আমি ছোটবেলা ফিরে পাওয়া নিয়ে লিখছি, তাহলে বলে রাখি তোমরা ভুল ভাবছ। আমি এখন ছোটই আছি। এখনো আমার মনে এই পৃথিবীর জটিল হিংস্রতার বীজ রোপণ হয়নি। হঠাৎ এখন পৃথিবীর এই চাপ ক্রমেই অসহ্যকর পতিত হচ্ছে। আর পরিবার কিংবা বংশ হিসেবে যাদের বড় হিসেবে ধরা হয়, তাদের জীবন বাইরে থেকে যত সহজ পতিত হয়, বাস্তব ঠিক তার উলট। সরৎ বাবু বা ভানু সিংহ ঠিক যেমন করে তাদেরকে নিজেদের গল্পে যেভাবে তুলে ধরেছে তা ঠিক নয়। বংশের নাম রাখা হেতু এসব পরিবারের সন্তানদের যে চাপ দেওয়া হয়, তা কেউ বলে না। যাই হোক আমার কথা আসি। এখন জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। আগামীতে আমার জীবন কিরূপ হবে তা এখনি সিধান্ত নেবেন বিধাতা। এখন আমার পিতা-মাতা আমাকে বলতে গেলে স্বাধীনতাই দিয়েছে, আমার যা পছন্দ তাই করতে। কিন্তু সমস্যা হয়ে দারায় সমাজ। এখন কিছু এঁচোড়ে-পাকা ছেলে বলবে, আমার জীবন আমার, তাতে অন্য কারোর অধিকার নেই। আমি আমার আমার মত চলব। আচ্ছা তাই যদি হয়, আমার একটা সরল প্রশ্নের উত্তর দেও, যখন তোমার জন্ম হয়, তখন কি তোমার বাব-মা তোমার থেকে অনুমতি নিয়েছিল? নাকি তুমি তোমার বাবা-মাকে বলেছিলে যে বাবামা তোমাদের বিয়ে হয়ে গেছে এবার তোমরা আমকে জন্মদেও? ওরে মুর্খের দল, তোমার জীবন তোমার নয়, এটা তোমার বাবা-মার ইচ্ছা মাত্র। তারা চাইলে তোমাকে জন্ম নাও দিতে পারত। আবার বেই মুর্খরা বলবে, তাহলে সমাজ যা বলে বলুক, আমি সমাজের কথা শুনব না। তা বাবা, তুমি ভাত খাও তো? খাও? ওটা কি তুমি চাষ করেছ? তুমি যে জামা পড় সেটা কি তুমি বানিয়েছ? এখন বলতেই পারো ওগুলোর জন্য ত আমি টাকাও দিয়েছি। মুর্খ, সব কিছু টাকা দিয়ে মাপা যায় না। আর যে টাকার এই দম্ভ তাও তোমার মা-বাবার।
এখন এতো কিছুর বলার মুল কারণ বলি। বাংলাদেশের আর পাঁচটা বাপমার মত আমার বাপ-মার মনের অতল গহীনে ছেলেকে মেডিকেল পড়ানোর ইচ্ছা উঁকি দেয়। এবং তাতে আমার আপত্তি নেই। কারণ আমি আমার বাবা-মাকে তার সম্ভাবনা খুবি কম তা আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম। ইঞ্জিনিয়ারিং এর কথা উতলেই, তাদের কথা হল চেষ্টা কর বুয়েট-এর জন্য। কিন্তু ভাই আমি বুয়েট পড়তে চি কিনা সেটা কেউ জানতে চাই নি। তাই আমি আজকে পাবলিক এর সামনে লিখিত আঁকারে ডিক্লেয়ার দিচ্ছি, আমি বুয়েটে পড়তে চাই না। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। এর আলাদা কোন নির্দিষ্ট কারণ নেই। আমি শুধু বুয়েটে পড়তে চাই না।
এইটুকুই।
ও ভালো কথা এখন নতুন আলয়ে অধিষ্ঠিত হয়েছি।
৩ বি, আপন হোয়াইট হাউস, সাগরধিঘিরপার, সিলেট।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন